বাংলার মন্দির নিয়ে তো অনেক বই, অনেক ফোরাম, অনেক ব্লগ আছে, কিন্তু বাংলার মসজিদ? ৮০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলায় রয়েছে ইসলাম ধর্ম। ঠিক যেমন বাংলায় টেরাকোটার অর্থাৎ পোড়ামাটির মন্দির আছে, তেমনই আছে পোড়ামাটির মসজিদ, এবং আরও অনেক প্রাচিন ইসলামী স্থাপত্য।
বাসুদেবপুর, বাঁশবেড়িয়া, খামারপুরা, দেবানন্দপুর, শিবপুর, কৃষ্ণপুর এবং ত্রিশবিঘা, এই সাতটি গ্রাম নিয়েই সপ্তগ্রাম – পশ্চিমবাংলার প্রাচীন বন্দর। হোসেন শাহী আমলের স্থাপত্যশৈলীর একটি উজ্জ্বল নিদর্শন সৈয়দ জামালুদ্দিনের মসজিদ এবং সপ্তগ্রামের ঐতিহাসিক স্থাপত্যগুলির মধ্যে একমাত্র এটিই অপেক্ষাকৃতভাবে অপরিবর্তিত রয়েছে।
মুর্শিদাবাদ শহরে দু’ পা এগোলেই মসজিদ। ছোট ছোট মসজিদে পুরো শহর ভর্তি। বেশিরভাগ মসজিদ তৈরি ১৮০০ সালের আসেপাসে। তেমনই একটি মসজিদ মিয়াঁ হিলাল মসজিদ। কার তৈরি? কবে তৈরি? এবং কি বোঝা যায় তার থেকে মুর্শিদাবাদের ব্যাপারে?
১৭০৪ খৃষ্টাব্দে বাংলার নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ রাজধানী ঢাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে আসেন মুর্শিদাবাদ। সেই মুর্শিদাবাদ শহরের সব থেকে বিখ্যাত ধর্মীয় স্থাপত্য হল কাটরা মসজিদ, যার সিঁড়ির নিচে শায়িত রয়েছেন খোদ মুর্শিদ কুলি খাঁ।
১৫১০ খ্রিষ্টাব্দে তৈরি হয় নুতনহাটের হোসেন শাহী টেরাকোটা মসজিদ। মসজিদের দেওয়ালে এবং মেহেরাবে, টেরাকোটা বা পোড়ামাটির নকাশি ফলক আজও দেখা যায়। কিন্তু নুতনহাটের হোসেন শাহী মসজিদের একেবারে পিন্ডি চটকে দিয়েছে আমাদের রাজ্য সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ।
মুর্শিদাবাদ শহর থেকে আন্দাজ ৪৩ কিলোমিটার উত্তরে ছোট্ট গ্রাম খেরুর। কিন্তু খেরুরকে আর পাঁচটা গ্রামের থেকে আলাদা করে দেয় খেরুরের মসজিদ, যার অপূর্ব সুন্দর টেরাকোটার কাজ এখনো বিদ্যমান।
সবথেকে বড়, সবথেকে পুরোনো, সবথেকে সুন্দর, এরকম মসজিদ নিয়ে তো অনেক লেখাই পাওয়া যায়। কিন্তু সবথেকে ছোট মসজিদ নিয়ে খুব বেশি লেখা বোধহয় নেই। অবশ্য এই বিশেষ মসজিদটিই যে কলকাতার ক্ষুদ্রতম, নিশ্চিত ভাবে তা আমি বলতে পারব না। কিন্তু যে মসজিদের ভেতরে ছ’জনের বেশি একসঙ্গে নামাজ পড়তে গেলে হাঁটুতে হাঁটুতে ঠোকাঠুকি লেগে যেতে পারে, সেই মসজিদ ক্ষুদ্রতম না হলেও, ক্ষুদ্র তো বটেই।
যে কোনো ব্যাপারে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হলে, আমায় ইমেল করতে পারেন